মার্কুস
গ্যাব্রিয়েলের নয়াবাস্তববাদ
[ প্রাথমিক ড্রাফট ]
সরওয়ার
কামাল
জার্মান
নিবাসি মার্কুস গ্যাব্রিয়েল একটি নয়া কিসিমের দর্শন প্রস্তাব করেছেন, তাই
সাম্প্রতিক কালে নয়া দার্শনিকচিন্তার উদ্গাতা হিসেবে তাকে নিয়ে বেশ সাড়া পড়েছে।
ব্যক্তিগতভাবে দার্শনিক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার সাথে সাথে তার প্রস্তাবিত দর্শনকেও
চিহ্নিত করা হচ্ছে একটি বিশেষ দার্শনিক ঘরানা আকারে, যার অভিধা নয়াবাস্তববাদ। বয়স
বেশি নয় কিন্তু এর মধ্যেই তিনি অনর্গল কথা বলতে পারেন দশ দশটি ভাষায়। শেলিং এর পরে
সর্বকনিষ্টতার রেকর্ড ভেঙ্গে অলঙ্কৃত করেছেন বন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর এবং
সভাপতির পদ। জাঁ পল সার্তের পরে রকস্টারের জনপ্রিয়তা নিয়ে এমন কোন দার্শনিকের
আবির্ভাব ঘটে নি, যার তুলনা হতে পারে মার্কুসের সাথে। অনেকে আবার তাকে জার্মান
দর্শনের পুনরুত্থানের পুরুহিত হিসেবেও ভাবতে শুরু করেছেন। ২০১৫ সালে প্রকাশিত “জগতটা কেন নেই” বা Why
the world does not exist শিরোনামে বই
লিখে পৃথিবীতে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। বলা হয়ে থাকে বিগত বছরে (২০১৫) দর্শনের সবচেয়ে
সফল বই এটি। যেখানে তিনি বলেছেন, এই গ্রহে যা কিছু আছে, সবই আছে; শুধু জগতটা নেই। তিনি
কুয়েন্টিন মিলাসোঁ এবং স্লাভোজ জিজেকের দর্শনকে তুলনামূলক বিচারের আওতায় আনেন এবং
সে সাথে জার্মান দর্শনের সাথে ব্রিটিশ-মার্কিন দর্শনের মধ্যে এক ধরণের ঘটকালি
করারও যেন দায় নিয়েছেন। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে তার গুরু থমাস নেগেলের প্রভাবে
বাস্তববাদি দৃষ্টিকোণ থেকে অধিবিদ্যার মৌলিক প্রশ্নগুলোকে পরখ করে দেখেন এবং
সেগুলোর জবাবের জন্য কান্টের মতো অধিবিদ্যার অধিবিদ্যা চর্চা না করে বরং প্রস্তাব
করেন অধিবিদ্যার বাস্তববাদ। কেউ
কেউ তার যুক্তিকে অভিহিত করেছেন অধিবিদ্যক শূণ্যতাবাদ
হিসেবে, আবার কেউ বলেছেন অনুধ্যানমূলক বাস্তববাদ হিসেবে। সেজন্যেই একই সাথে কেউ তাকে বলেছে
উত্তর-উত্তরাধুনিকতাবাদি, আবার কেউ বলেছেন প্রচলিত ঘরানার তত্ত্ববিদ । তবে এসব লকবের অনেককিছুই তিনি সরাসরি অস্বীকার করেছেন অথবা
অন্যায্য প্রমাণ করেছেন। যেমন, অনুধ্যানমূলক
বাস্তববাদের কথা তিনি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ধ্রুপদীধারার দর্শন পাঠের মধ্য
দিয়ে, বিশেষ করে গ্রীক দর্শন ও জার্মান ভাববাদের সবক হজম করে মার্কুস গ্যাব্রিয়েল
দার্শনিক হওয়ার প্রয়াস পেয়েছেন। তার প্রধান প্রধান রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, অতিবর্তী
তত্ত্ববিদ্যা (Transcendental Ontology) , জার্মান ভাববাদে বিষয়ী নিয়ে জিজেকের
সাথে যৌথভাবে লিখেছেন পুরাণ, উন্মাদনা ও ঠাট্টা (Mythology, Madness
and Laughter), সংবেদের জায়গাঃ নয়াবাস্তববাদি তত্ত্ববিদ্যা ( Field
of Sense: A Newrealist ontology) , জগতটা কেন নেই ( Why the World does not exist)।
বন
যখন পশ্চিম জার্মানির রাজধানী, সে সময় তার বেড়ে ওঠা রাইনে, যেটা কিনা বেলজিয়াম,
ফ্রান্স ও নেদারল্যাণ্ডের নিকটবর্তী। প্রাচীন রোম সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে রাইনে
পুরনো ঐতিহ্যের অভাব ছিলো না, তার ওপর কসমোপলিটান শহর হিসেবে ছিলো উদার সাংস্কৃতিক
পরিবেশ। তাই জার্মানির রাইনে জন্ম নিয়ে দর্শন পড়াটা আকস্মিক ছিলো না, তারপরও বলতে
হবে তার দর্শনমগ্নতা শুরু হয়েছিলো আকস্মিকতা দিয়ে। তার বয়স সবে চৌদ্দ কি পনের, একটি পার্টিতে গিয়ে পাঠ শুনেন শোপেনহাওয়ারের বই
হতে একটি বিশেষ অনুচ্ছেদ, যেখানে গুহার রূপকের আদলেই পেশ করা হয়েছে সেই প্রশ্ন, “আমরা কীভাবে জানি আমাদের
জীবনটা দীর্ঘ স্বপ্নমাত্র নয়?” কাকতালীয়ভাবে এর কিছু দিনের মধ্যেই স্কেটবোর্ডিং করতে গিয়ে তিনি পড়ে যান।
কনুই ভেঙ্গে যায়। শুয়ে থাকতে হয় হাসপাতালের বেড়ে। এই অবসরকে তিনি শোপেনহাওয়ার ও
কিয়ার্কেগার্ড পড়ার জন্য ব্যবহার করেন। কিন্তু তাদের দর্শনে যে যুক্তিগুলো ছিলো তা
তার কাছে যথার্থ মনে হয় নি। তাই তিনি কান্টের ক্রিটিক অব পিউর রিজন বা
বিশুদ্ধবুদ্ধির পর্যালোচনা পাঠ করতে শুরু করেন এবং কান্টের অধিবিদ্যা আত্মস্থ করতে
শুরু করেন। এক সময় জার্মানে কোন ব্যক্তির বৌদ্ধিক পরিপক্কতা বিচারের জন্য তাকে
কান্টের বইটি পড়ছে কি না জিজ্ঞেস করা হতো। তবে মার্কুস সেই লোকপ্রিয় পরীক্ষা দিতে
নয় বরং জীবনের অর্থ খোঁজতে একাধারে শেষ করলেন কান্ট, হেগেল, নীটশে এবং
শোপেনহাওয়ারের দর্শন।
উত্তরাধুনিকতাবাদ,
বিজ্ঞানবাদ ও প্রকৃতিবাদের পর্যালোচনা শেষে মার্কুস এসব মতবাদ ও প্রায়োগিক মডেলের
অসারতা প্রমাণ করে তার নিজস্ব পথ তৈরি করে নেন। তবে এই পথ তৈরি করার আগেই তাকে সাফ
করতে হয়েছে অতিবর্তী ভাববাদের নানা জঞ্জাল। এমনকি জার্মান দর্শনের আসল গুরু
কান্টের অনেক কিছুই তিনি নাকচ করেছেন। তিনি বিজ্ঞানবাদের অসারতা প্রমাণ করেন সংবেদ
অঞ্চলের বহুত্ব ও প্রেক্ষিতের তারতম্য দ্বারা, আবার জার্মান ভাববাদের অনেকটাই
বর্জন করেন ...। কান্ট অধিবিদ্যার মৌলিক বিবেচনার ক্ষেত্রে কল্পনার আশ্রয় নিয়েছেন।
কারণ কান্ট প্রথমেই বলেছেন, স্বয়ংসত্তাকে জানা যায় না, তবে মানবীয় চিন্তার কাঠামো
ও অবস্থানের দিক থেকে, স্থান-কালের আধারে বিশেষ অস্তিমানতা কল্পনা করা যায়। কিন্তু
স্বয়ং স্থান-কালের আঁধার কী অর্থে আছে বা অস্তিত্ববান তা স্পষ্ট নয়। কীসের
অস্তিত্ব আছে আর কীসের নেই তার পার্থক্য বিচার করতে গেলে, আগে অস্তিত্ব কী জা জানা
প্রয়োজন। অথবা কীভাবে আমরা কোন কিছুর অস্তিত্ব সম্পর্কে অবগত হই তা অনুধাবন করতে
হয়। সবকিছুই আছে, শুধু জগতটা নেই, কথাটা স্ববিরোধী শুনাতে পারে। তবে মার্কুস জগত ও
মহাজগতের অস্তিত্বকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করেন, তাতে অনেকগুলো তত্ত্ববিষয়ক অঞ্চলের সংবেদ
এলাকায় কাল্পনিক বস্তুর নিজস্ব বস্তুডোমেইন থাকার কথা বলেন। এমনকি বস্তুকেও মানুষ
একটি প্রেক্ষিত থেকে দেখে, যে প্রেক্ষিতের কোন সীমা নেই। অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত
বস্তুগত ও অবস্তুগত জিনিসের অস্তিত্বকে আমরা যে প্রেক্ষিত থেকে বিবেচনা করি, স্বয়ং
জগতের অস্তিত্বকে সেই প্রেক্ষিত থেকে বিবেচনা করা যায় না। এখানেই বৈজ্ঞানিক
প্যারাডাইমের সীমাবদ্ধতা। যেমন ধরুন, আপনি আছেন। কোথায় আছেন? বাসায়। বাসা কোথায়?
চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম কোথায়? বাংলাদেশে। বাংলাদেশ কোথায়? দক্ষিণ এশিয়ায়। দক্ষিণ
এশিয়া কোথায়? এশিয়ায়। এশিয়া কোথায়? পৃথিবীতে। পৃথিবী কোথায়? শূন্যে। শূন্য কোথায়?
কোথাও না। মানে আমরা আছি নাইয়ের মধ্যে, কাজেই পৃথিবীর অস্তিত্ব নেই। কারণ হলো শেষ
প্রশ্নটি ছাড়া বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে আপনি একইরকম স্থান-কালের আধার,
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও প্যারাডাইম ব্যবহার করেছেন। কিন্তু শেষ প্রশ্নের ক্ষেত্রে
পৃথিবীর অস্তিমানতা বোঝার জন্য আপনি যাকে আধার মানেন সেই আধার বৈজ্ঞানিক আধার না। অর্থাৎ পূর্বেকার প্রশ্নগুলোর উত্তর যে সংবেদ
অঞ্চলে ধরা দিয়েছে, শেষ প্রশ্নের জবাব সেই সংবেদ অঞ্চলে ধরা দেয় না। তাই
অস্তিত্বকে বোঝতে হবে সংবেদ অঞ্চলের সাথে আপেক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তিতে। কিন্তু এসব
কথা বিজ্ঞানবাদিরা স্বস্থির সাথে নেন না। কারণ তারা মনে করেন মহাজগতের সবকিছুরই একটি
বস্তুগত ভিত্তি আছে। পৃথিবীর অস্তিত্বও বস্তুগত ভিত্তির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু
মার্কুস বলেন, সবকিছুর অস্তিত্ব বস্তুগত ভিত্তির ওপর নির্ভর করে না। এমনকি বস্তুগত
ভিত্তিও অনেকসময় সংবেদের ভিন্নতা দেখায়।
কান্টের
কাছে অস্তিত্ব হলো বিশ্বকে ধারণ করা। অর্থাৎ স্থান-কালের কাঠামোতে ব্যক্তিবিশেষ বা
বস্তুবিশেষকে ধারণ করা। আমরা যখন বলি টেবিলে একটি বই আছে, তখন আমরা বোঝাতে চাই যে
একটি বিশেষ স্থান কালে জগত বই নামক এই বস্তুটিকে ধারণ করে। একই মডেল ব্যবহার করে
যদি আমি জগতের অস্তিত্ব বিচার করি তাহলে প্রশ্ন আসবে জগত কি জগতকে ধারণ করে? এই যে
ধারণ করা বলতে আমরা আসলে কী বোঝাতে চাই? অংশ ও সমগ্রের সম্পর্ককে আমরা কীভাবে
দেখি? এই সম্পর্কের সমগ্র অবয়বটাকে কী আমরা দেখতে পাই? অথবা আমরা যদি বলি জগত হলো
স্থান-কালের অধীন এক সত্তা, যা জগতে আছে, তখন তা কি আদৌ কোন সংবেদ তৈরি করে? কান্ট
দুই ধরণের অস্তিত্বের মধ্যে পার্থক্য করেছেন; একটি ব্যক্তিবিশেষের অস্তিত্ব এবং
আরেকটি বিশ্বের অস্তিত্ব। মানুষের চিন্তাকে মানবীয় অবস্থান থেকে দেখার কারণে মানুষ
মনে করে যেভাবে অন্য বস্তুসকল আছে সেভাবে জগতটা আছে। মানুষের যে অভিজ্ঞতা তার
আলাদা আলাদা সংবেদ অঞ্চল বা ডোমেইন আছে। টেবিলের ওপর একটি বইয়ের সংবেদ যে ডোমেইন এ
সংবেদ তৈরি করে বিশ্বের অস্তিত্ব সেই একই ডোমেইনে সংবেদ তৈরি করে না। কারণ এই দুই
প্রকার অস্তিত্বের ব্যাপারে আমাদের সংবেদ তৈরির প্রক্রিয়াটাকে দুইটি অঞ্চলে আলাদা
করে দেখতে হয়। যেখানে অস্তিত্ব বলতে আমরা কিছু গুণের অস্তিত্ব বুঝাচ্ছি। অর্থাৎ
পৃথিবীতে আছে এই রকম দুইটি বস্তুকে আলাদাভাবে জানার জন্য পার্থক্য রচনাকারি গুণ। অন্যদিকে
পৃথিবীর অস্তিত্বকে পৃথিবীর ভেতরের কোন বস্তুর অস্তিত্বের সাথে গুণগত পার্থক্য বা
তুলনা করে জানা যায় না। কাজেই আমরা পৃথিবীতে যেসব জিনিসের অস্তিত্ব আছে বলে মানি
সেসবের অস্তিত্ব এই অর্থে আছে যে সেগুলো একটি বিশেষ প্রেক্ষিতে আমাদের কাছে ধরা
দেয়, যেটাকে মার্কুস বলছেন সংবেদ অঞ্চল। এই ধরণের সংবেদ অঞ্চলের সংখ্যা অসংখ্য।
মার্কুস
সেক্ষেত্রে কান্ট হতে ভিন্নভাবে এক ধরণের অধিঅধিবিদ্যা বা মেটামেটাফিজিক্স এর
অবতারণা করেন। হাইডেগারও বলেছিলেন যে পৃথিবী নেই মনে করাটা অধিঅধিবিদ্যক
শূন্যতাবাদ। পৃথিবীর সত্তা, পরমস্বরূপ, গঠন,
আকার এসব ধারনাগতভাবে শূন্য।
আবার
কান্ট এবং হেগেলের অধিবিদ্যা বিষয়ক চিন্তার সূত্রকে কাজেও লাগিয়েছেন তার নিজস্ব
বোঝাপড়া তৈরির ক্ষেত্রে।
মার্কুসের
মূল প্রতিপাদ্য হলো অস্তিত্ব। কোন কিছু হওয়া বলতে আসলে কী বোঝায়? ধরুন করিম ( হয় )
একজন শিক্ষক। শিক্ষক হওয়া মানে কী?
গ্যাব্রিয়েল
এখানে গ্রহ হিসেবে পৃথিবীর অস্তিত্ব অস্বীকার করছেন না। তিনি ভাববাদি নন যিনি
বস্তুর স্বাধীন অস্তিত্বকে অস্বীকার করবেন। তিনি সত্তাগত একত্ববাদের বিপক্ষে। কোন
কিছুই শূন্য বা নিঃসঙ্গভাবে অস্তিত্বশীল না। সব কিছুই অন্য কোন না কোন কিছুর সাথে
সম্পর্কের সূত্রে, বিশেষ ডোমেইনে থাকে।
প্রত্যেক সত্তাই তার নিজ নিজ ডোমেইনের সত্তা। যে কোন বস্তু আছে কি নেই তা নির্ভর
করে এটি কোন ডোমেইনে আছে তার ওপর অথবা এটি কোন সংবেদ অঞ্চলে আছে তার ওপর। প্রত্যেক
ডোমেইনের জন্য আলাদা আলাদা নীতি, নিয়ম ও আইন আছে যা দ্বারা ঐ বস্তুকে
সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নায়িত করা যায়। একটি দেশকে যেমন তার সংবিধান ও আইন দ্বারা
বোঝা যায়, বা মহাজগতকে যেমন প্রাকৃতিক নিয়মের দ্বারা বোঝা যায়, সেভাবে বিশ্বকে
বোঝার জন্য বা এর অস্তিত্ব অনুধাবনের জন্য এরূপ কোন সাধারণ নীতি বা আইন থাকা
দরকার। কিন্তু সেই রকম কোন নীতি নেই। তাই বিশ্বের অস্তিত্ব নেই।
গ্যাব্রিয়েল
যে নয়াবাস্তববাদ প্রস্তাব করছেন তা সত্তার অস্বীকৃতি হিসেবে নয় বা ভাববাদ,
প্রতিবাস্তববাদ, বহির্জাগতিক বাস্তবের অস্বীকৃতি নয় বরং এর মূল প্রতিপাদ্য হল এই
যে, এমন কোন সত্তা নেই যাকে জগত বলা যাবে। যা আছে তা হল বিষয় ( অবজেক্ট ) ও
সংবেদের জায়গা (ফিল্ড অব সেন্স)। সাম্প্রতিক অধিবিদ্যার বেশিরভাগ ধারণাই ভ্রান্ত।
জগত এবং বাস্তবতা পরস্পর বিনিময়যোগ্য অর্থে ব্যবহার করার কারণে এমনটা হচ্ছে। এই
ধরণের শব্দসমষ্টি দ্বারা আমরা যা বোঝাই তা দ্বারা অস্তিত্বের গুণ প্রকাশক কোন
কিছুকে নির্দেশ করে না। কারণ অধিবিদ্যাকে স্রেফ তত্ত্ববিদ্যায় পর্যবসিত করা হয়েছে।
এই দুই ফিল্ডকে আলাদা রাখা দরকার। তত্ত্ববিদ্যা হচ্ছে প্রণালীবদ্ধভাবে
অস্তিত্ত্বের অর্থ অনুসন্ধানের একটি প্রক্রিয়া অথচ অধিবিদ্যা হলো সত্তা ও অবভাসের
পার্থক্য বিচারকারি এবং জগত হিসেবে জগতসম্পর্কীয় একটি সামগ্রিকতার তত্ত্বের (Theory
of totality ) বোঝাপড়া। অধিঅধিবিদ্যক শূন্যতাবাদ বলতে
গ্যাব্রিয়েল যা বোঝাতে চান তা হলো, এমন কোন জগতের অস্তিত্ব নেই যার পরম প্রকৃতি,
সারসত্তা, গঠন, কাঠামো, এসবের ধারণাগত আধেয় নেই। সব কিছুকে ধারণ করে এই রকম একটি
বড় জিনিসের ধারনাটি অধ্যাস মাত্র।
অধি-অধিবিদ্যা
যে বিষয়গুলো নিয়ে মাথা ঘামায় তা হলো
Comments